জোহরান মামদানিই কি নিউ ইয়র্কের পরবর্তী মেয়র হচ্ছেন?

দিলীপ চক্রবর্ত্তী
গত ২৪শে জুন নিউ ইয়র্ক শহরের মেয়র নির্বাচনের “প্রাইমারী ইলেকশন” হয়ে গেল। পাঠকদের অবগতির জন্য “প্রাইমারী ইলেকশন” ব্যাপার কি একটু জানাতে চেষ্টা করব। আমেরিকার নির্বাচনের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হল এ “প্রাইমারী ইলেকশন”। আমেরিকায় প্রাইমারী ইলেকশন ঠিক করে দেয় কোন প্রার্থী আগামী নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করবে। ভারতে যেমন রাজনৈতিক দল ও তার নেতা ঠিক করে দেয় কে কে আগামী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে, তেমনই রাজনৈতিক দল বা নেতার পরিবর্ত্তে সংশ্লিষ্ট দলের সকল সভ্যগণ এ প্রাইমারী নর্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন করে দেন কে এ সংশ্লিষ্ট দলের প্রার্থী হবে। অর্থাৎ আমেরিকায় প্রার্থী নির্বাচনে দল বা দলের নেতা শেষ কথ নয়, দলের সভ্যগণই শেষ কথা বলেন,আর ভারতে দলের সভ্যদের মতামতের কোন গুরুত্ব নেই, দলের নেতা বা নেতৃবর্গ ঠিক করেন কে বা কারা সংশ্লিষ্ট দলের হয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবেন । যেমন উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় তৃণমূলের নেত্রী মমতা যাকে স্থির করেন, তিনি ই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করেন, সেখানে প্রার্থী বা দলের সভ্যদের মতামতের কোন মূল্য নেই। কিন্তু প্রাইমারী ইলেকশন প্রার্থী নির্বাচনে সম্পুর্ণভাবে স্বচ্ছতা এনে দেয়। আজকাল শুনতে পাই – দলছুটরা একদল থেকে আরেক দলে গিয়ে প্রার্থী হয়, কারণ তারা হয়ত দল বা দলের নেতাকে সন্তুষ্ট করে নির্বাচনে প্রতিযোগিতার সুযোগ পায়। যেহেতু প্রাইমারী ইলেকশন থাকলে দলের কর্মীরা প্রার্থী নির্বাচন করে, সেখানে নেতা বা দলের পকেট ভর্তি করে প্রার্থীপদ পাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই শূণ্য। ভারতীয় গণতন্ত্রে প্রাইমারী ইলেকশনের স্থান কখনও হবে কি? এর উত্তর একমাত্র ভবিষ্যৎ-ই দিতে পারবে, তবে আমার জীবদ্দশায় হবে বলে মনে হয় না।
গত ২৪ শে জুন নিউ ইয়র্ক সিটিতে ডেমক্র্যাটিক পারটির Primary Election হয়ে গেল। দশ জনের বেশি প্রার্থী ছিলেন এ প্রাইমারী ইলেকসনে। যার মধ্যে Ex-Governor Andrew Cuomoও একজন প্রার্থী ছিলেন। বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত NY State Assembly Man Zohran Mamdani প্রাইমারী ইলেকসনে সকলকে কুপোকাত করে প্রথম স্থানটি দখল করে নেন। আগামী ইলেকসনে জোহরান মামদানিই হবেন Democratic Partyর Candidate যিনি লড়বেন Republican Partyর Candidate Curtis Sliwaর সাথে। তবে বর্ত্তমান মেয়র এরিক এডামস এবং প্রাক্তন গভর্ণর Andrew Cuomo নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়বেন বলে শোনা যাচ্ছে। যদি সেটাই হয় তা হলে ইলেকশনে দুই দলের দুই প্রার্থী এবং দুজন নির্দল প্রার্থী, মোট চারজন নর্বাচনে লড়বেন আগামী নভেম্বর মাসে।
মেয়র পদপ্রার্থী জোহরান মামদানি মানুষ হিসেবে কেমন, তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী কেমন বা তিনি নিউ ইয়র্কের মানুষের জন্য কি করতে চান – একটু আলোচনা করার চেষ্টা করা যাক।
অধ্যাপক মামুদ মামদানি ও চিত্র পরিচালক মীরা নায়ারের পুত্র জোহরান মামদানি। জোরানের ১৮ই অক্টোবর, ১৯৯১ সনে উগান্ডার (আফ্রিকা) ক্যাম্পালাতে জন্ম হয় এবং স্বল্প সময়ের জন্য তিনি “সাউথ আফ্রিকাতে” ছিলেন। জোরানের পিতা একজন সিয়া মুসলমান আর মাতা পাঞ্জাবী হিন্দু। জোহরান মামদানি বর্তমানে নিউ ইয়র্ক স্টেট এসেম্বলির একজন নির্বাচিত সদস্য । জোহরানের পিতা ঘানার Kwame Nkrumah নীতির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে জোহরানের মধ্যম নাম রাখেন “কুয়েম”।
ব্রঙ্কস হাইস্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পাশ করে “আফ্রিকানা স্টাডিস”এ Bowdoin College, Maine থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। মামদানি সেখানে School’s chapter of Students for Justice in Palestine এর যুগ্ম প্রতিষ্ঠাতা। মামদানি হিপ-হপ মিউজিকের ফ্যান এবং একটি এলবাম প্রকাশ করেছেন বলেও জানা গেছে। তিনি একজন সিয়া মুসলমান, তিনি সিরিয়ান আমেরিকান রামা দুয়ালির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ। তিনি LGBTQর সমর্থক ও তাদের স্বাধিকার অর্জনের মিছিলেও যোগদান করেছেন।
মামদানির ইলেকসন প্রতিশ্রুতি – Free City Bus, Public affordable Social Housing, Rent Freeze on Rent-Stabilized Units and building affordable social Housing. He is a harsh critic of Israel. Mamdani has received the endorsement of Liberal US Senator Bernie Sanders and another liberal Congress Woman Alexandra Ocasio-Cortez.
মামদানি রাজনৈতিক মহলে একজন “সোসালিস্ট” হিসেবে পরিচিত, এবং নয় সদস্য বিশিষ্ট “State Socialist in Office” এর সদস্য। স্টেট এসেমব্লীতে “সোসালিস্ট” পরিচিতি থাকলেও তাঁকে কমিউনিজমের কাছের মানুষ বলেই গণ্য করা হয়।
মামদানি ইজরাইলের কঠোর সমালোচক। প্যালেস্তাইনের প্রতি তাঁর গভীর সহানুভূতি, “ইহুদী রাষ্ট্র” হিসাবে ইজরাইলের অস্তিত্ব নিয়ে তাঁর কোন মতামত পাওয়া যায় নি, তবে তিনি নিউ ইয়র্ক স্টেট আসেম্বলীর “Hauloacast Remembrance Day” বিলটি Co-Sponsor করতে রাজী হননি। উগ্রপন্থী “হামাস“ নিয়ে এখনও তাঁর কোন স্পষ্ট বক্তব্য শোনা যায় নি।
মামদানি সকল শিশুর জন্য “সার্বজনীন শিক্ষার” সমর্থক। তিনি নিউ ইয়র্ক সিটির প্রতিটি শিশুর পরিবারকে বিনা মূল্যে “বেবী বাস্কেট” উপহার দিতে চান। বেবী বাস্কেটে থাকবে “ডায়াপার ও নানা রকম নার্সিং সাপ্লাই”। তিনি অলবানির স্টেট এসেম্বলীতে একটি বিলএর প্রস্তাব দিয়েছেন – যেটা ‘New York University‘s and Columbia University‘s state property tax exemptionএর” স্ট্যাটাস বাতিল করে দেবে এবং দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভুত অর্থক্ষতি হবে। তিনি এ বাতিলীকরণের লব্ধ “অর্থ “City University of New York system,” এ দান করতে চান।
তিনি ১০০ মিলিয়ন ডলার নিউ ইয়র্ক স্টেট বাজেট থেকে নিউ ইয়র্ক সিটির পাতাল রেল ও বিনা ভাড়ায় বাসএ যাতায়াতের একটি প্রকল্পের জন্য নির্দিষ্ট করতে পেরেছেন।
মামদানির সমর্থনে Congress Woman Alexandria Ocasio-Cortez said “ Mamdani is her first choice for New York City Mayor, saying, “Mamdani has demonstrated a real ability on the ground to put together a coalition of working-class New Yorkers that is strongest to lead the pack.”[52] She appeared at a rally for Mamdani, where she voiced her support for his candidacy and criticized his main opponent, former governor Andrew Cuomo, saying: “Not ranking Cuomo […] is the right thing to do to turn the page on the future of a Democratic party that does not continue to repeat the mistakes that have landed us here. We can never get past Donald Trump if we continue to elect the same people and make the same decisions that got us here in the first place.”
Senator Bernie Sanders endorsed Mamdani, saying: “Our nation faces a fundamental choice: Will we continue with a corporate-dominated politics driven by billionaires or will we build a grass-roots movement fueled by everyday people, committed to fighting oligarchy, authoritarianism, and kleptocracy?”]
Also on June 16, the editorial board of The New York Times wrote that it did “not believe that Mr. Mamdani deserves a spot on New Yorkers’ ballots”, calling his experience “too thin” and likening his agenda to “a turbocharged version of Mr. de Blasio‘s dismaying mayoralty”.[56] The Atlantic‘s Michael Powell likened his campaign to magical realism, claiming it was “exuberantly disconnected from actual government budgets and organizational charts.”[48]
Following the primary election, President Donald Trump described Mamdani as a “100% Communist lunatic”. American ICE এর বিরোধীতা করার প্রতিশ্রুতির উত্তরে President Trump called the candidate মামদানি a “radical leftist” and a “lunatic.”
নির্বাচনী প্রচারের প্রথমদিকে যদিও মামদানি পিছিয়ে ছিলেন, কিন্তু নির্বাচনে আশ্চর্যভাবেই তিনি অগ্রণী Andrew Cuomoকে পরজিত করেন। Andrew Cuomo অর্থাৎ এক বিশাল মহীরূহের পতন হল নিউ ইয়র্ক সিটির প্রাথমিক নির্বাচনে, আর এই প্রথম একটি ইসলামের বীজ বপন করা হল নিউ ইয়র্ক সিটির ইতিহাসে। কে জানে এ বীজটাই হয়ত লন্ডনের সাদিক হোসেনের মত বেড়ে উঠবে।
নির্বাচনী প্রচারে তিনি হামেশাই ইজরাইলের নিন্দা বা সমালোচনা করেছেন, এমন কি ইজরাইলের অস্তিত্ব নিয়েও বিরূপ কথা বলেছেন, সমভাবেই প্যালেস্তাইনের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন, এতৎ সত্বেও নির্বাচনে কেন যে মামদানির প্রতি নির্বাচকরা বিরূপ হননি – এটাই ভাবার কথা। এ ব্যাপারে বলতে গিয়েই The New York Times wrote that Mamdani’s victory in the June 2025 Democratic mayoral primary “offered the starkest evidence yet that outspoken opposition to Israel and its government — and even questioning its existence as a Jewish state — is increasingly acceptable to broader swaths of the party, even in areas where pro-Israel Jews have long been a bedrock part of the Democratic coalition.”
মামদানি তাঁর নির্বাচনী প্রচারে বলিউডের “দিওয়ার” ছবির অমিতাভ বচ্চনের বিভিন্ন দৃশ্য ব্যবহার করেছেন।
ইদানীং নিউ ইয়র্ক শহরে বিবিধ অপরাধের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কারণ ডেমোক্রেটিকরা পেশাদার অপরাধী জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার পর ডেমোক্র্যাট শাসিত শহরগুলিতে পুলিসের বাজেট কমিয়ে দেয় এবং পুলিসের কর্মক্ষমতা দমন করে দেয়, ফলে ডেমোক্র্যাট শাসিত শিকাগো, লস এঞ্জেলস, নিউ ইয়র্ক ইত্যাদি শহরগুলি অপরাধ জগতের মুক্তাঞ্চল হয়ে যায়। খুন, রাহাজানি, ধর্ষণ ইত্যাদি অপরাধের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়। অপরাধের দৌরাত্মে বড় বড় ডিপার্ট্মেন্ট স্টোর Macy’s, Nordstrom, JC Penny ইত্যাদি উঠে যায়।
শাসক ডেমোক্রাটিক দলের দূরদর্শিতার অভাবে আজও বহু শহর ভুগছে। জনগণ অপরাধ বা অপরাধীদের চায় না, তারা আইন শৃঙ্খলায় বিশ্বাসী এবং অপরাধহীন শহর চায়, আর সে জন্যই ডেমোক্র্যাট পার্টি আজ আর জনপ্রিয় নয়, বরং এক কঠোর সমালোচনার সম্মুখীন। কিন্তু মামদানি অপরাধ দমনে পুলিসের সক্রিয় ভুমিকায় তেমন বিশ্বাসী নন, বরং আইনের শাসনের পরিবর্তে তিনি মনে করেন – কারাগার অপরাধীদের মানসিক পরিবর্তন করে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনে না, তার জন্য প্রয়োজন মর্যাদাপূর্ণ কর্ম সংস্থান, আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং সামাজিক স্থিতিশীল নিরাপত্তা। মামদানি মানসিক স্বাস্থ্য সংরক্ষনের জন্য একটি “সামাজিক নিরপত্তা” বিভাগ সৃষ্টির প্রস্তাব দিয়েছেন।
নিউ ইয়র্ক সিটির জন্য মামদানির অর্থনৈতিক ব্যবস্থা অত্যন্ত আলোচ্য বিষয় হতে পারে। তিনি শহরে বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রন করতে চান। তিনি “সামাজিক গৃহোন্নতি বিভাগের” মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জন্য গৃহ নির্মান করতে চান।
He also wants to “increase density around mass transit hubs” and “upzone wealthier neighborhoods”, citing housing policies in Jersey City and Tokyo as better examples.[81]
মামদানি নিউ ইয়র্ক সিটিতে প্রতি ঘন্টায় ৩০ ডলার ন্যূনতম বেতন ধার্য করতে চান। তিনি নিউ ইয়র্ক স্টেটে করপোরেট ট্যাক্স ৭.৫% থেকে ১১% এ বৃদ্ধি করতে চান। উপরন্তু তিনি শহরে ১ মিলিয়নের বেশী আয়ের উপর আরও ট্যাক্স বৃদ্ধি করে ২০ বিলিয়ন ডলার তুলতে চান। এ অর্থ দিয়ে তিনি CUNY ও SUNYতে বিনা বেতনে পড়া, সারা রাজ্যে “শিশু সংরক্ষন,” সাবওয়ে ভাড়া বৃদ্ধিরদ এবং সরকারী বাসে বিনা ভাড়ায় যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে চান। এক সময় মামদানি “Taxi Alliance Workers” জন্য অনশন ধর্মঘটও করেছিলেন। তিনি LGBTQর একজন সমর্থক এবং তাদের অধিকার রক্ষার জন্য সর্বদাই তাদের হয়ে আন্দোলন করেছেন – বলে শোনা যায়।
পরিবেশ নিয়ে তিনি এতটাই সচেতন যে তিনি “Gas Powered Peaker Power Plant” স্থাপনে বাধা দেন। মেয়রপ্রার্থী হিসেবে তিনি “Green Schools for a Healthier New York City” স্কুল বিল্ডিং তৈরী করতে চান , এবং ছাদে “সোলার প্যানেল” বসাতে চান।
ইজ্রাইলের প্রতি মামদানির মনে কোন সহানুভূতি নেই। তিনি ইজরাইলের ঘোরতর বিরোধী ও কঠোর সমালোচক। তিনি ইজ্রাইলের বিরুদ্ধে একটা বিল রাজ্য সভায় পেশ করেছিলেন, যার নাম ছিল “Not on our dime”, বলা বাহুল্য এ বিলের কি পরিণতি হয়েছিল জানা যায়নি। তিনি গণহত্যা ও জাতিবিদ্বেষের অভিযোগ করেছেন ইজরাইলের বিরুদ্ধে, এমন কি তিনি ইজরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করে আন্তর্জাতিক ক্রিমিনাল কোর্টে বিচারের জন্য পেশ করতে চেয়েছেন।
ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি আমেরিকার একজন দেশীভূত নাগরিক (Naturalized Citizen)। তিনি “সিরিয়ান আমেরিকান” রামা দুয়ালীর সাথে বিবাহে আবদ্ধ হন। ধর্মের পরিচয়ে তিনি একজন শিয়া মুসলমান। ব্যক্তিগতভাবে তিনি মনে করেন আমেরিকায় কোন Billionair এর অস্তিত্ব থাকা উচিত নয়।
আগামী মেয়রের নির্বাচন নিঃসন্দেহে একটি নতুন রেকর্ড সৃষ্টিকারী ঐতিহাসিক ঘটনা। প্রথমতঃ তিনি নিউ ইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলমান নির্বাচন প্রার্থী যিনি মেয়রের পদপ্রার্থী হয়ে নির্বাচনের ময়দানে নেমেছেন।
এবার নির্বাচন নিয়ে একটু আলোচনায় আসলে বোঝা যাবে তাঁর জয়ের সম্ভাবনা আছে কি না ।
নিউ ইয়র্কে প্রায় ৮.৪ মিলিওন লোক বাস করেন। তার মধ্যে (white – 30.9%, Hispanic – 28.7%, African American – 20.2% and Asian -15.6%, approx.) মুসলমানের সংখ্যা ৭.৫ লক্ষ থেকে ১ মিলিয়ন হতে পারে। তবে মুসলমান ভোটারের সংখ্যা সাড়ে তিন লক্ষ,নির্বাচনের ইতিহাস বলে – প্রার্থী ভালো হোক বা খারাপ, প্রার্থী মুস্লিম হলে সাধারণতঃ বড় সংখ্যায় মুসলমানের ভোট পেয়ে যায়, Muslim Candidate সব সময় non-Muslim Candidate থেকে মুসলমানের ভোট বেশি পেয়ে থাকে (৯০% ও হতে পারে)। ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৪.৭ মিলিয়ন, ট্র্যাডিশনালি কমবেশি ৬০% লোক ভোট দিয়ে থাকেন। শ্বেতাঙ্গ ডেমোক্র্যাটরা বেশীরভাগই Ultra-left, এবং ওদের চিন্তাধারাও Radical Left, ওদের অধিকাংশ ভোট পরবে মামদানির পাতে। যদি Andrew Cuomo এবং Eric Adams দুজনেই প্রার্থী হন, তাহলে মামদানি নিশ্চিতভাবেই আগামী মেয়র নির্বাচিত হবেন। কারণ Non-Muslim ভোট তিন ভাগ হয়ে যাবে, এবং মুস্লিম ভোটের দৌলতে নির্বাচনে মামদানির জয় অনিবার্য। যদি Eric Adams বা Andrew Cuomoর মধ্যে যে কোন একজন প্রার্থী হন তা হলে ভোটের সমীকরণ মামদানির বিরুদ্ধেও যেতে পারে, তখন মামদানির পক্ষে ভোটটা অতটা সহজ নাও হতে পারে। কে জিতবে বলা মুশকিল কারণ বাকী ৪৮.৯% (এফ্রো-এমেরিকান আর স্প্যানিশ ভোট সম্মিলিতভাবে) সম্ভবতঃ মামদানির বিরুদ্ধে যাবে, এ পরিস্থিতে কে নির্বাচনে জিতবেন বলা মুশকিল।
মিনেসোটা ও শিকাগোর ডেমোক্র্যাট আইন শৃঙ্খলার কথা নির্বাচকরা ভুলে যায় নি। নিউ ইয়র্ক শহরকে তার শিকাগো বা মিনেসোটা বানাতে চান না। বিগত কয়েক বছর ধরে র্যাডিকেল বাম শিক্ষার অবিচারে ২৪ থেকে ৪৫ বছরের কলেজ শিক্ষিতা মায়েরা ডেমোক্র্যাটদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন, তার প্রমান আমরা পেয়েছি ভার্জিনিয়ার গভর্ণর নির্বাচনে। এ মায়েরা তাঁদের ছেলেমেয়ের জন্য “আল্ট্রা লেফটG শিক্ষা চাননি, তাঁরা Incumbent Democrat Governorকে আস্তাকুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে একজন Republican Governor প্রার্থীকে নির্বাচিত করেছেন। এ কারণেই নিউ ইয়র্ক শহরের কলেজ শিক্ষিতা মায়েরা মেয়র নির্বাচনে মামদানির জয়ের গলার কাঁটা হয়ে উঠতে পারেন। কারণ মামদানি্র ক্রিয়াকলাপ ইতিমধ্যেই তাঁকে একজন “সোসালিস্টের” পরিচিতি দিয়েছে। এ পরিচয় তাঁর বিরুদ্ধে গিয়ে তাঁকে পরাজয়ের গ্লানিও এনে দিতেও পারে। নির্বাচন হতে এখনও তিন মাসের বেশি সময় আছে। এর মধ্যে অনেক কিছুই ঘটতে পারে এবং নির্বাচনের চেহারাই বদলে যেতে পারে। ২০২৫এর মেয়র নির্বাচনে এত “Ifs and buts” অথবা অনিশ্চয়তার বীজ লুকিয়ে আছে যে কারো পক্ষেই ইলেকশনের ফলাফল নিয়ে ভবিষ্যতবাণী করা সম্ভব নয়। আমাদের সকলকেই “আশায় থাকে চাষা”র মত নভেম্বেরের ৪ তারিখের রাত ৯টার ভোট গণনা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তখনই সকলে জানবে “ক্যাপিটাল সিটি অফ দি ইকোনমিক ওয়ার্ল্ডএ” মেয়রের জয়ের “শিরোপা”কার মাথায় উঠবে।