PF এর সুদ ফিরে গেল ইন্দিরা চরণ সিংহের যুগে। আদনির ঋণ ২.২ ট্রিলিয়ন ছড়িয়ে। আপনি বরং ভব্যো কাশি ঘুরে এসে আরেক বার কাশ্মীর ফাইলস দেখুন
প্রসূন আচার্য
আমাদের মত বেসরকারি সংস্থায় কাজ করা ভারতের সাড়ে ৬ কোটি শ্রমিক কর্মচারীর কোনও পেনশন নেই। PF এর জমা টাকা ব্যাংকে বা অন্য জায়গায় লগ্নী করে সুদ বা বার্ষিক রিটার্ন এর টাকায় বাঁচতে হবে শেষ জীবনে। সুসজ্জিত মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ, IT কর্মী থেকে কালি মাখা চটকল শ্রমিক পর্যন্ত সবারই একই ভবিষৎ।
ভুল হলো, পি এফ থেকে একটা পেনশন দেয় বটে, তা কারও মাসে ৫০০ টাকা, খুব বেশি হলে ২২০০। সেই PF এর সুদ বিগত ৪৩ বছরের মধ্যে সব থেকে কম দেওয়ার কথা ঘোষণা করলো মোদী সরকার। এর আগেই অবশ্য নিজেদের পছন্দের ট্রাস্টিদের দিয়ে তা পাশ করিয়ে নিয়েছে। গত বছর ছিল ৮.৫ শতাংশ। এই বছর তা কমে দাঁড়ালো ৮.১ শতাংশে।
এটা যখন হলো তখন কিন্তু সব জিনিসের দাম ঊর্ধ্বমুখী। ব্যাংকও সুদের হার বাড়াচ্ছে। মোদী সরকার বলেছিল, PF এর টাকা বেশি করে শেয়ার বাজারে লাগানো হচ্ছে, যাতে বেশি return পাওয়া যায়। গত এক বছরে শেয়ার বাজার ভালো বেড়েছে। চাঙ্গা বলা যায়। তাহলে PF এর সুদ কমলো কেন ? কে জবাব দেবে ?
মোদী সরকার আপনাকে ব্যস্ত রেখেছে অযোধ্যায় রাম মন্দির, কাশি বিশ্বনাথ করিডোরের পরে এবার কি মথুরায় কৃষ্ণ জন্মভুমিতে শাহি ইদগা মসজিদ এর পালা? এই প্রশ্নে। আপনার ভয় ধরিয়ে দিচ্ছে শ্রীলঙ্কা। ভাবছেন, আমাদের দেশেও এমন হবে না তো ? আর বিরোধীদের ব্যস্ত রেখেছে সিবিআই, ই ডি লাগিয়ে দিয়ে। ওরাও চুপ! মোদী জানেন, রেশনে ২ টাকা কেজি চাল গমটা চালিয়ে যেতে পারলেই হলো। আবার ভোটে জিতবো।
এদিকে এশিয়ার সেরা ধনী হওয়ার পরে গৌতম আদানি এখন বিশ্ব সেরার দৌড়ে। একের পর এক ব্যবসা বাড়াচ্ছেন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে। এই বছরে ৪২% বেড়ে গৌতম আদানি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে 2.2 ট্রিলিয়ন। ট্রিলিয়ন মানে বোঝেন? এক লাখ কোটি মানে ১,০০,০০০ কোটি হচ্ছে এক ট্রিলিয়ন। এবার গুণ করুন। যমুনা এক্সপ্রেসের কাজের বরাত পেয়েই আদানি স্টেট ব্যাংকের কাছে ২০০০ কোটি টাকা ঋণ চেয়েছে। এই বার বুঝুন অবস্থাটা!
এটাই মোদীর আচ্ছে দিন। স্বচ্ছ ভারত। মেক ইন ইন্ডিয়া। যে দিন আদানি ডুববে, সেই দিন ভারতের অর্থ ব্যবস্থা চৌপাট হয়ে যাবে। ভেঙে পড়বে তাদের ঘরের মত। স্টেট ব্যাংক অব্দি ফেল মারবে! এটাই সঙ্ঘ পরিবারের মানে RSS এর অর্থনীতি। যারা ইন্দিরা গাঁধীর ঘোর বিরোধী তো বটেই, ব্যাংক জাতীয়করণ, রাজাদের ভাতা বিলোপ, কয়লা শিল্প জাতীয়করণেরও বিরুদ্ধে ছিলেন।
আপনি অবশ্য পরিবারবাদের জন্য দিন রাত কংগ্রেসকে, নেহরু থেকে সনিয়া গাঁধী আর তাঁর পুত্র কন্যাদের গালি দিতেই পারেন। সেই অধিকার আপনার আছে। তাতে অবস্থা কিছু বদলাবে না। এই যেমন ৩৭০ ধারা তুলে দিয়ে জম্মু কাশ্মীর রাজ্য ভেঙে কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করেও কোনও ফল হয়নি। প্রায় প্রতিদিন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা মুসলিম আততায়ীর হাতে খুন হচ্ছেন। বিগত তিন মাসে ৮০ শতাংশ পণ্ডিত নিজেদের ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়েছেন। অমিত শাহ চুপ। মিডিয়াও চোখে ঠুলি পড়ে আছে। যেমন শাসক ঠিক তেমনি মিডিয়া।
আপনি পারলে ভব্যো কাশি থেকে ঘুরে এসে নতুন করে আরও একবার কাশ্মীর ফাইলস দেখুন।
C@ Prasun Acharya ফেসবুক পোষ্ট থেকে নেওয়া