GeneralIndiaNewsPoliticsSambad Matamat

এখন শুধু মোথাবাড়ী, সামনে হবে বাড়ী বাড়ী – ১

সীতাংশু গুহ 

পশ্চিমবঙ্গের মোথাবাড়ী ঘটনার প্রেক্ষিতে লেখা আমার বই ‘ভারত ভাগ হয়েছে ধর্মের জন্যে’ (প্রকাশক: আনন্দ প্রকাশনী) প্রাসঙ্গিক মনে হলো, তাই এ লেখা, তবে বলা ভালো, ‘এখন শুধু মোথাবাড়ী, সামনে হবে বাড়ী বাড়ী’। পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু বুঝতে পারছেন না যে, তাঁদের সামনে মহাবিপদ ঘনিয়ে আসছে। ওহে হিন্দু, উদারতা ভাল, কিন্তু মুসলিম তোষণ করে স্বজাতির বিনাশ উদারতা নয়, ভীরুতা, কাপুরুষতা, দুর্বলতা। বাঁচতে হলে, পরবর্তী প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে ‘ওঠ, জাগো’, সময় আর হাতে বেশি নেই! পালিয়ে বাঁচা যায়না, বাঁচার আর এক নাম সংগ্রাম। শ্রীগীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বারবার বলেছেন, ‘ওঠ, যুদ্ধ কর’। এ লড়াই বাঁচার লড়াই। এ লেখা পশ্চিমবাংলার হিন্দু’র জন্যে-।

বাঙ্গালী হিন্দুর একটি গৌরবময় ইতিহাস আছে। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙ্গালী হিন্দু’র অবদান অতুলনীয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্যে হিন্দুদের ত্যাগ ও অবদান অপরিসীম। অথচ বাংলাদেশে হিন্দুরা এখন নিজদেশে পরবাসী, অত্যাচারিত, নিপীড়িত। বিভিন্ন পরিসংখ্যান, তথ্য, উপাত্ত জানায়, ১৯৪৭’র পর থেকে এপর্যন্ত পূর্ব-বাংলা বা আজকের বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫কোটি হিন্দু হারিয়ে গেছে। এতবড় বিপর্যয় পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল, এটি ‘নীরব গণহত্যা বা নীরব হিন্দু হত্যা’। পশ্চিমবঙ্গ ধীরলয়ে সেইদিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে হিন্দু নির্যাতনের কাহিনীর আলোকে ২০২৫-এ দাঁড়িয়ে একথা বলা যায় যে, পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা নিরাপদ নন। 

আমরা ঘরপোড়া, তাই সিঁদুরের মেঘ দেখে টের পাই। পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু কমছে, মুসলিম বাড়ছে, সমস্যা বাড়ছে, আরো বাড়বে। বাংলাদেশে হিন্দু কমছে তো কমছেই, এখন ৮%। পাকিস্তানে <২%। নিরোদ সি চৌধুরী তাঁর ‘আত্মঘাতী বাঙ্গালী’ বইয়ে এই হতভাগ্য ‘হিন্দু-বাঙ্গালীর’ কথাই বলেছেন, বাঙ্গালী হিন্দু অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে তা বলা বাহুল্য। ভারত ভাগ হয়েছিলো ধর্মের ভিত্তিতে, পুরোপুরি জনসংখ্যা বিনিময় হওয়া উচিত ছিলো। তা হয়নি, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান আজ মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র, হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায় নিশ্চিহ্নপ্রায়। ভারত সরাইখানা। যারা একদা বললো, ‘হিন্দুদের সাথে থাকা যায়না’, তাঁরা বহাল তবিয়তে ভারতে থাকলো। যারা ‘লড়কে লেঙ্গা পাকিস্তান’ নিয়ে ঘরে ফিরলো তাঁরা হিন্দুদের কঁচুকাটা করে বিদায় দিলো। কি চমৎকার তাই-না? 

একটি ছাগলকে বধ করার সময় পাশের ছাগলটি কাঁঠাল পাতা চিবায়, পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুর অবস্থা অনেকটা তাই, তারা বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে হিন্দু নিশ্চিহ্ন হতে দেখে ‘কাঁঠাল-পাতা’ চিবাচ্ছে। অবিভক্ত বাংলায় মুসলমান বারবার এককাট্টা হয়ে বিভক্ত হিন্দুদের পরাজিত করেছে। স্বাধীনতার পূর্বে অবিভক্ত বাংলায় কোন হিন্দু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী/ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না (একটু সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে হলেও বাংলার প্রধানমন্ত্রী বলা হয়েছে), যারা ছিলেন তারা হচ্ছেন স্যার খাজা নাজিমুদ্দিন, এ,কে ফজলুল হক ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। ভারত স্বাধীন হলে হিন্দুরা সেই সুযোগ পায়, যদিও তা আর বেশিদিন ধরে রাখতে পারবেন বলে মনে হয়না। Pic courtesy: Deccan Herald

Leave a Reply

Your email address will not be published.