India

GeneralIndiaNewsPoliticsSambad Matamat

এখন শুধু মোথাবাড়ী, সামনে হবে বাড়ী বাড়ী – ১

সীতাংশু গুহ  পশ্চিমবঙ্গের মোথাবাড়ী ঘটনার প্রেক্ষিতে লেখা আমার বই ‘ভারত ভাগ হয়েছে ধর্মের জন্যে’ (প্রকাশক: আনন্দ প্রকাশনী) প্রাসঙ্গিক মনে হলো,

Read More
IndiaNewsPoliticsSambad MatamatWorld

এক ভারতের জ্বালায় বাঁচিনা, এর ওপর আবার ইসরাইল! 

লক্ষ্য করেছেন নিশ্চয় যে, ক্রিকেটে ভারত হারলেই বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা খোদ ভারতের একাংশ মানুষ আনন্দে মেতে ওঠে। এ আনন্দ-উৎসব হিন্দু বিদ্বেষ থেকে উৎসারিত। ভারত-বিদ্বেষ যা মূলত হিন্দু বিদ্বেষ, এ উপমহাদেশে মজ্জাগত, আপাতত: এ থেকে বেরিয়ে আসার কোন লক্ষণ নেই? এজন্যে পাকিস্তান হিন্দু-শূন্য, বাংলাদেশ হিন্দু-শূন্য হবার পথে। বাংলাদেশে ভারতের পরাজয়ে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। না, এটি কোন গোপন বিষয় নয়, বাংলাদেশের দর্শক প্রকাশ্যেই বলেন, ভারত হারায় তাঁরা ঈদের আনন্দ উপভোগ করেন।   ‘দি নিউজ-বাংলা’ একদা হেডিং করেছিলো যে, ‘ভারতের হার, বাংলাদেশে উৎসব’। সব মুসলিম ঐদলে না, যশোরের একজন জাহাঙ্গীর আলম সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “মানুষ এত ‘বে-ইমান’ হয় কি করে, শুধুই ধর্মের জন্যে—ছিঃ বাংলাদেশ ছিঃ”? তাঁর পোষ্টে একজন ভারতীয় শুভাশীষ ভট্টাচার্য্য লিখেছেন, ‘যে কেউ অষ্ট্রেলিয়াকে সাপোর্ট করতেই পারে (২০২৩), কিন্তু কারণ জানতে চাইলে বলা হলো, ভারত মুসলিম রাষ্ট্র নয়! অস্ট্রেলিয়াও তো মুসলিম রাষ্ট্র নয়, তাহলে? ভারত হিন্দু। বিষয়টি ভারত নয়, বিষয়টি হিন্দু, এক্ষেত্রে ভারত-হিন্দু সমার্থক। ভদ্রলোক লিখেছেন, বিষয়টি পরিষ্কার, এন্টি-হিন্দু ভারতের টীমে মোহাম্মদ সামি, সিরাজ আছে, তাঁরা চমৎকার খেলেছেন, তাহলেও হবেনা, হিন্দুর সাথে থাকলে চলবে না? তামান্না তাবাস্সুম মিথিলা সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ইন্ডিয়া সব ম্যাচে জিতেছে, একটিতে হারলে সমস্যা নেই! তাঁর পোষ্টে একজন শাহরিয়ার নাসিফ একটি উধৃতি দিয়েছেন, ভারত ১০টি জিতেছে, ১টি হেরেছে অর্থাৎ ‘চোরের দশদিন, গৃহস্থের একদিন’।  ‘আরকি’ নামের একটি পোর্টাল ছবির আকারে একটি বক্তব্য দিয়েছে, তাতে লেখা,‘ইন্ডিয়া হেরে যাওয়ার খুশিতে চিৎকার করতে গিয়ে বড়ভাই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তাঁকে উন্নত চিকিসার  জন্যে ভারত নেয়া হচ্ছে’। মো: শাহরুখ ইসলাম এবং আরো অনেকে টিটকারী করে বলেছেন, ‘হে প্রভু, হরি, কৃষ্ণ, জগন্নাথ, প্রেমানন্দ, ‘এ কেয়া হুয়া ’ হিন্দুরা বলেছেন, এরপরও তো ওঁরা কৃষ্ণ নাম নিচ্ছে! ভারত-পাকিস্তান খেলায় অধিকাংশ বাংলাদেশী পাকিস্তানকে সমর্থন করে, এর হয়তো একটি কারণ থাকতে পারে, কিন্তু ভারত অষ্ট্রেলিয়া ফাইনালে (২০২৩) ভারতের পরাজয়ে উল্লাস বহুলাংশে  ‘বিজাতীয়’। হিন্দু বিদ্বেষ, ভারত বিদ্বেষ ব্যতিত আর কি কারণ থাকতে পারে?  কেউ যদি বলেন, ভারত হারায় এ উচ্ছাস সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ বৈ কিছু নয়, তাহলে এঁরা আপনাকে সাম্প্রদায়িক বানিয়ে দেবে এবং ‘চোরের মা’র বড় গলা’ হাঁকিয়ে বলবে, ‘খেলার মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা টেনে আনবেন না’! সন্ত্রাসের কথা উঠলেও এঁরা বলেন, ধর্মের সাথে সন্ত্রাসের কোন সম্পর্ক নেই? জিজ্ঞাসা করুন, খেলার মাঠে নামাজ পড়েছিলো কারা? বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। এটি করে ধর্মের কি লাভ হয়েছে জানিনা, তবে খেলায় জয় আসেনি। এর নিট ফলাফল সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উস্কে দেয়া-যার পরিণতি ভারত বিদ্বেষ, যার উলঙ্গ প্রকাশ ভারতের পরাজয়ের পর সাম্প্রদায়িক উল্লাস।  একজন চমৎকার একটি হাইপোথিটিক্যাল প্রশ্ন করেছেন, তিনি জানতে চেয়েছেন, ফাইনাল খেলাটি যদি ভারত ও ইসরাইলের মধ্যে হতো, এবং ইসরাইল জিততো, তাহলে বাংলাদেশীরা কি করতো? আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, বাংলাদেশিরা খেলাটি ‘বয়কট’ করতো, বলতো, এক ভারতের জ্বালায় বাঁচিনা, এর ওপর আবার ইসরাইল! 

Read More