GeneralGlobal WatchNewsPoliticsSambad MatamatWorld

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২০২৪

শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক।।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয় নভেম্বর মাসের প্রথম সোমবারের পরের মঙ্গলবার। সেই হিসাবে এবারের নির্বাচন মঙ্গলবার ৫ই নভেম্বর ২০২৪। আধুনিক ইতিহাসে মুখ্যত প্রধান দু’টি দল, ডেমক্রেট ও রিপাবলিকান পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে থাকেন। ডেমক্রেটদের বলা হয়, লিবারেল, রিপাবলিকানরা রক্ষণশীল। রিপাবলিকানদের ‘জিওপি’ (গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টিও) বলা হয়ে থাকে। নির্বাচনে যিনি জিতবেন ২০শে জানুয়ারি ২০২৫ তিনি হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা হবেন। 

এ বছর প্রাইমারি গুরুত্বহীন, কারণ বাইডেন ও ট্রাম্প ইতিমধ্যে নিজ নিজ দলের মনোনয়নের জন্যে প্রয়োজনীয় ডেলিগেট পেয়ে গেছেন। তবুও নিয়মরক্ষার প্রাইমারি ও ককাস চলছে। নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতে ৯জন রিপাবলিকান, ৪জন ডেমক্রেট ও ২জন স্বতন্ত্র মিলে মোট ১৫জন প্রার্থী ছিলেন। যদিও দুই দলের অন্য প্রার্থীরা ইতিমধ্যে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। স্বতন্ত্র দুজন এখনো আছেন। এরমধ্যে নিহত প্রেসিডেন্ট জন কেনেডির ভ্রাতুষ্পুত্র রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র-কে নিয়ে ডেমক্রেটরা চিন্তিত।  

ডেমক্রেটদের মধ্যে এবার বাইডেনের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রার্থী ছিলেন না, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিকি হেলি থাকলেও ৫ই মার্চ ২০২৪ ‘সুপার টুইসডে’র পর তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। সুপার টুইসডে মুখ্যত: দলীয় প্রার্থী কে হচ্ছেন তা ইঙ্গিত করে। ২০২০-তে ডেমোক্রেট শিবিরে সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স এগিয়ে ছিলেন। সুপার-টুইসডে-তে দল বাইডেনের পেছনে দাঁড়ায়, তিনি এগিয়ে যান, এবং চূড়ান্তভাবে দলীয় মনোনয়ন লাভ করে, নির্বাচনে জিতে প্রেসিডেন্ট হ’ন।

জনগণের সরাসরি ভোটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হ’ন না? তিনি নির্বাচিত হ’ন, ইলেকটোরাল ভোটে। মোট ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোট আছে, এরমধ্যে যিনি ২৭০টি ভোট পান, তিনি নির্বাচিত হন। এজন্যে ২৭০-হচ্ছে, ম্যাজিক নাম্বার।  জনসংখ্যা অনুযায়ী প্রতিটি ষ্টেটের কিছু ইলেকটোরাল ভোট থাকে। যেই প্রার্থী যেই ষ্টেটে জয়ী হ’ন তিনি সেই ষ্টেটের সবগুলো ইলেকটোরাল ভোট পান। তবে মেইন ও নেব্রাস্কায় ইলেকটোরাল ভোট ভাগাভাগি হয়ে থাকে। মেইনে ৪টি এবং নেব্রাস্কায় ৫টি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে। 

ইলেকটোরাল ভোট-ব্যবস্থার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে আল গোর এবং হিলারী ক্লিন্টন পপুলার ভোটে জিতেও প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। অর্থাৎ নির্বাচনটি জাতীয় পর্যায়ে হলেও সিদ্ধান্ত হয় ষ্টেট পর্যায়ে। ছোট-বড় সকল ষ্টেটের সমান গুরুত্ব বহাল রাখতে মার্কিন রাষ্টের প্রতিষ্ঠাতারা এ ব্যবস্থাটি করে গেছেন। একই ভাবে এবং একই কারণে প্রতি ষ্টেট থেকে দুইজন সিনেটর নির্বাচিত হয়ে থাকেন। ১০/১২টি ষ্টেট ব্যাতিত প্রায় সকল ষ্টেট মূলত: ডেমক্রেট বা রিপাবলিকান শিবিরভুক্ত। ঐ ১০/১২টি ষ্টেটকে ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড ষ্টেট’ বলা হয়ে থাকে এবং প্রার্থীরা ঐসব ষ্টেটে প্রচার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এবারো ব্যতিক্রম নয়?  ১৮ বছরের মার্কিন নাগরিক ভোটার হতে পারেন। ভোট দিতে হলে বৈধ পরিচয়পত্র দেখাতে হয়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কি শুধুই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন? আসলে তা নয়, এবার কংগ্রেসের পুরো ৪৩৫টি আসনে নির্বাচন হচ্ছে, কিছু সিনেট, গভর্নর পদে লড়াই হচ্ছে। বর্তমানে হাউস বা কংগ্রেস রিপাবলিকানদের দখলে, সিনেট ডেমক্রেটদের। নভেম্বরে সবকিছু পাল্টে যেতে পারে। ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড ষ্টেট’-এ ট্রাম্প এবছর বাইডেন থেকে সামান্য এগিয়ে আছেন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published.