NewsPoliticsSambad MatamatWorld

দেশীয় অঙ্গনে খেলা জমছে না, তাই বিদেশী ফ্রন্ট?   

  

 ।।শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক।। 

এতকাল ছিলো শুধু সরকার পক্ষ। অধুনা ওপেন হয়েছে, ‘বিএনপি পক্ষ’ বা ‘এন্টি আওয়ামী লীগ পক্ষ’। সরকার এবার নিজেই খুলছে, ‘বিদেশী ফ্রন্ট? একেই হয়তো বলে, ‘খাল কেটে কুমির আনা’? এই তৃতীয় পক্ষ খোলাটি কি খুব জরুরী, বা এর কি কোন প্রয়োজন আছে, অথবা এতে কে লাভবান হচ্ছে? মিডিয়ায় দেখলাম, বাংলাদেশে এখন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হ্যাস টক অফ দ্য কান্ট্রি-তাই এসব কথা বলা আরকি! মনে হচ্ছে, সরকার দেশীয় অঙ্গনে খেলে আরাম পাচ্ছেন না, তাই বিদেশী অঙ্গন খুলছেন?  

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হ্যাস নিখোঁজ বিএনপি নেতা সুমনের বাসায় গেছেন। তিনি সেখানে কিছুক্ষন অবস্থান করেন। রাষ্ট্রদূত অথবা সুমনের পরিবার এব্যাপারে কোন কথা বলেননি। এসময় রাষ্ট্রদূতের সাথে ছিলেন, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের বাংলাদেশ ডেস্ক অফিসার লিকা জনসন। বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমন ২০১৩ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর নিখোঁজ হ’ন। বসুন্ধরায় এক আত্মীয়ের বাসা থেকে সুমনকে ৱ্যাব পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। 

‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’-এ এক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে, আওয়ামী লীগ মানবাধিকার লংঘন করেনা, সুরক্ষা দেয়, মানবাধিকার নিশ্চিত করে। একই অনুষ্ঠানে সেতুমন্ত্রী ও দলীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পিটার হ্যাস বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গেলে বেশি ভালো লাগতো। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমি জানিনা তিনি কার পরামর্শে ‘মায়ের ডাক’-র বাসায় গেলেন, তাঁকে বিতর্কিত করাটা ঠিক হয়নি। 

বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, কূটনীতিকদের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ। তিনি রাষ্ট্রদূতের গাড়ি বহরে আক্রমণের চেষ্টায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন যে, সরকার কূটনীতিকদেরও ভয়ভীতি দেখিয়ে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করছেন। আগেও রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্ণিকাট-র গাড়িবহর আক্রমণ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, এমনিতে বাংলাদেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, এখন কূটনীতিকদের নিরাপত্তাও প্রশ্নবিদ্ধ। 

দেশের ৩৪জন বিশিষ্ট নাগরিক মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সমালোচনা করেছেন। তাদের বক্তব্য, রাষ্ট্রদূত পিটার হ্যাস সাবেক ছাত্রদল নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের শাহীনবাগের বাসা থেকে বেরিয়ে এলে ‘মায়ের কান্না’ নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা তাদের দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি দিতে গেলে তিনি তাদের কথা না শুনে এড়িয়ে যান। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এ আচরণকে তাঁরা কূটনৈতিক শিষ্টাচার-বর্হিভূত বলে মনে করছেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।  

মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিজে উদ্যোগী হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড: মোমেন-র সাথে দেখা করে ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস ও তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অভিযোগ গুরুতর, কূনৈতিকদের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব সরকারের। রাষ্ট্রদূত ‘মায়ের ডাক’-র বাসায় যাবেন তা জানতো দূতাবাস, সংশ্লিষ্ট থানা ও সরকার। ফাঁস হলো কোন সূত্র থেকে? ‘মায়ের কান্না’ কিভাবে জানলো যে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত শাহিনবাগে সুমনের বাসায় গেছেন, ঠিকানা কে দিয়েছে? 

‘মায়ের কান্না’ এন্টি বিএনপি, কারণ তাঁরা জিয়াউর রহমান আমলের নিহত সেনা সদস্যদের স্বজন। তাঁদের বিক্ষোভ করা বা স্মারকলিপি দেয়ার অধিকার আছে, কিন্তু যেভাবে এটি করা হয়েছে তা উদ্দেশ্যমূলক। মিডিয়া হেডিং করেছে, রাষ্ট্রদূতের গাড়ি ঘেরাও! বিদেশমন্ত্রী সাংবাদিকদের যা বলেছেন, তাতে বোঝা যায়, তিনি রাষ্ট্রদূত ঘেরাও ঘটনায় কিছু মনে করেননি, বরং এতে তিনি ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র’ দেখতে পেয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.