চীন নতুন করে করোনায় কাঁপছে। হাসপাতালে বেড নেই। জমছে লাশের পাহাড়। কী হবে ২০২৩ এ সূচনায় ?
প্রসূন আচার্য
ডিসেম্বরে শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই চীনে হটাৎ করে প্রচণ্ড করোনা হচ্ছে। লাখ লাখ মানুষ অসুস্থ। হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। মাটিতেও রোগীর জায়গা হচ্ছে না। বেজিং এর হাসপাতালে বেড নেই। অন্য অনেক শহরেও একই অবস্থা!
গত ক’দিনে দৈনিক প্রায় ১০০০ মানুষ শুধু বেজিং শহর ও আশপাশে মারা গিয়েছে। কবর স্থানে জমছে লাশের পাহাড়। সেখানে ২৪ ঘণ্টা কর্মীদের কাজ করতে হচ্ছে হাসপাতালের মতই। জরুরী পরিষেবার কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
দেশ জুড়ে বিশেষ করে বড় শহরে সাধারণ মানুষের বিক্ষোভের ফলে কিছুদিন আগেই চীনে কড়া লক ডাউন প্রত্যাহার করে নেয় জিং পিং এর একনায়কতান্ত্রিক কমিউনিস্ট নামধারী সরকার। কিন্তু এখন পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে PCR টেস্ট করে রিপোর্ট আসার আগেই বহু লোক মারা যাচ্ছে।
একটি সূত্র জানাচ্ছে, সরকার চাইছে, করোনার গ্রাফের পিক যেন খুব দ্রুত ওঠে। পারলে ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই। তারপরে পড়ে যাবে। আসলে চীনে কত শতাংশ মানুষকে কী ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, সরকারের পক্ষ থেকে সেই তথ্য পুরো গোপন রাখা হয়েছে। আদৌ সেই ভ্যাকসিন কার্যকরী কিনা এখন তাই নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। তার উপরে টানা লক ডাউনের ফলে হার্ড ইমিউনিটি সেই ভাবে তৈরি হয়নি।
ওদিকে ২০২২ সালে চীনের অর্থনীতি বড় ধাক্কা খেয়েছে। একাধিক প্রাদেশিক সরকারি ব্যাংক ফেল মেরেছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ টাকা ফেরত পায়নি। কোনও দিন পাবে বলেও মনে হয় না। সরকার জানিয়েছে, সাধারণ মানুষের টাকা মানেই সরকারি সম্পত্তি! বন্দুকের নল দিয়ে টাকা ফেরতের দাবিতে মানুষের আন্দোলন দমন করা হয়েছে। উইঘুর মুসলিমদের উপরে অত্যাচার আরও বেড়েছে। চীনের রফতানিও কমতির দিকে। শুধু চীন থেকে মোদীর ভারতেই রফতানি বেড়েছে। অন্য দেশে কমেছে। সুতরাং ২০২৩ সালে কি হবে, সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়। তাই করোনা রুখতে নতুন করে লক ডাউন করলে দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে যে আঘাত পড়বে চীন আর তা সামলাতে পারবে না। সুতরাং জিং আর লক ডাউনের পথে হাঁটবেন না। এটা পরিষ্কার।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসেও ঠিক একই ভাবে চীন থেকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা পৃথিবীতে। তাই এই মুহূর্তে চীনের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করতে ভারত সরকারকে দ্রুত কড়া সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিমান চলাচল অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
জিং প্রশাসনের দাবি, নভেম্বর মাসে চীনে করোনায় মৃত্যু প্রায় শূন্যতে এসে ঠেকেছিল। কিন্তু হটাৎ করে লক ডাউন প্রত্যাহার হতেই লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে পড়ে। কোনও সুরক্ষা নেয়নি। তাই এই ভাবে রকেট গতিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে।
ঘটনা যাই হোক, ২০২২ এর শেষে আমাদের দেশ থেকে আরম্ভ করে গোটা পৃথিবী যখন করোনাকে জয় করে আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে চলেছে, হাট বাজার, স্কুল কলেজ, ব্যবসা বাণিজ্য, যানবাহন সব যখন আগের মতই চলছে, ঠিক তখনই চীনে নতুন করে বিপদ ঘণ্টা বাজছে।
কী হয়, সেটা আগামী এক মাসের মধ্যেই বোঝা যাবে। অপেক্ষা করা ছাড়া এই আদানি শেঠ নির্ভর মোদীর ভারতে আর কিই বা করার আছে সাধারণ মানুষের? কারণ, চীনে ফেসবুক, whatsapp অন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান। তাই ওই দেশের খবর বাইরের জগতে আসা প্রায় অসম্ভব। তাহলে কি আমরাও আবার কঠিন অবস্থার মধ্যে পড়তে চলেছি।? ভবিষৎ এই প্রশ্নের উত্তর দেবে। C@ Prasun Acharya ফেসবুক থেকে সংগৃহীত