ব্রিটেনে হিন্দু মাত্র ১.৫ %, ভারতীয় বংশোদ্ভূত ২.৩%, তবু প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ঋষিই

প্রসূন আচার্য
UK অর্থাৎ গ্রেট ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ঋষি সুনক। ঘোষণা হয়ে গেল। কারণ কনজারভেটিভ পার্টির মধ্যে লড়াই থেকে সরে গেলেন পেনি।
সুনক ব্রিটেনের প্রথম অশ্বেতাঙ্গ প্রধানমন্ত্রী হবেন।
১) ব্রিটেনের জনসংখ্যার মাত্র ২.৩ শতাংশ ভারতীয় বংশোদ্ভূত।
২) ব্রিটেনের জনসংখ্যার মাত্র ১.৫ শতাংশ হিন্দু। মুসলিম কিন্তু প্রায় ৬ শতাংশ। খ্রিস্টান প্রায় ৯০ শতাংশ।
৩) ব্রিটেনের রাষ্ট্র ধর্ম খ্রিস্টান। হোটেলে ঘরের বিছানায় মাথার কাছে বাইবেল রাখা থাকে। আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা তাই বলে।
এর পরেও গরুকে পুজো করা ঋষি ( যাতে আমার ব্যক্তিগত ভাবে প্রবল আপত্তি আছে) প্রধানমন্ত্রী হতে পারছেন! কারণ, ওই দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র এবং সরকারি স্তরে ধর্মনিরপেক্ষতা আছে। সুনোক সফল হবেন, নাকি ব্যর্থ, সেটা ভবিষ্যৎ বলবে। কিন্তু আপাতত তিনি প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন। এটা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, ভারতে হলে কি এটা সম্ভব হত ? মোদী অমিত শাহের ভারতে? ধর্মের ভিত্তিতে দিন রাত ভারতীয়দের ভাগ করা এই বদমাইশ সর্বভারতীয় দালাল মিডিয়া আর টিভি চ্যানেলের ভারতে ?
উত্তর: অসম্ভব।
মনমোহন সিংহ সংখ্যালঘু শিখ হয়েও প্রধানমন্ত্রী হতে পেরেছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর জন্য। একথা অস্বীকার করা যাবে না। আজকের দিন হলে সম্ভবত কংগ্রেস সেই ঝুঁকি নিতেই পারত না।
কিন্তু তখন থেকেই ধর্মীয় ভাবে ভারতকে আরও বেশি করে ভাগ করা শুরু করে দিয়েছিল বিজেপি, RSS এবং তাদের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের কর্মীরা। যার ফল আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি। দিন রাত শুধু হিন্দু মুসলিম খ্রিস্টান…।
একটু আগে মুকেশ আম্বানির চ্যানেল সর্বভারতীয় টিভি ১৮ হিন্দি দেখছিলাম। সেখানে এক সাংবাদিক দেখাচ্ছেন, একটা বড় গাছের ছাল ছাড়ালেই “জয় শ্রীরাম” লেখা ফুটে উঠছে! এমনই গাছের মাহাত্ম্য। মানে গাছটাও বিজেপির মতই জয় শ্রীরাম মন্ত্র নিয়েছে! এমন অপবিজ্ঞান এর কথা কেউ শুনেছে ? কিন্তু টিভি চ্যানেল বলছে শুধু নয়, দেখাচ্ছে। কেন হচ্ছে তার কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই!
আর রিপাবলিক, টাইমস নাউ, জি নিউজ, টিভি ৯ ভারতবর্ষ, আজতক হিন্দি দেখাচ্ছে কী ভাবে মোদী অযোধ্যার রাম মন্দির থেকে আরম্ভ করে বিভিন্ন মন্দিরে পূজা দিচ্ছেন। দীপাবলীর দিনে ব্যবসা, লক্ষ্মীলাভ, অর্থের কথা কোথাও নেই। নেই কোনও আলোচনা। কারণ, মোদী চান না। বিজেপি চায় না এই সব নিয়ে কথা হোক।
ভারতে কোনও সাদা চামড়ার খ্রিস্টান প্রধানমন্ত্রীর কথা কেউ ভাবতে পারেন ? অসম্ভব।
এমনকি ১৪ শতাংশ জনসংখ্যার মুসলিম প্রধানমন্ত্রীর কথা ভাবাও সম্ভব নয়। অথচ আমরা এখনও অব্দি সংবিধান অনুযায়ী ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র।
সেই কারণেই আগের একাধিক পোস্টে ঋষি সুনককে “হিন্দু ” বলে উল্লেখ করেছি। আশা করি, যাঁরা প্রশ্ন করছিলেন তাঁরাও জবাব পেয়ে গেলেন।
ফেসবুক থেকে সংগৃহীত