GeneralHealthIndiaNewsPolitics

‘এবার চোখ রাঙাতে আসতে চলেছে তৃতীয় ঢেউয়ের পাশাপাশি ডেল্টা প্লাস’ – সতর্ক বার্তা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের

অরুণ কুমার

সারা দেশের মানুষকে আবার করোনা মোকাবিলায় নামতে হবে। ভাবা গিয়েছিল প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউকে সামলে নিলেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে করোনা মহামারী। কিন্তু না, বাস্তবে সম্ভবত: অন্য চিত্র দেখতে চলেছে দেশবাসী।করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা নিয়ে উপস্থিত ডেল্টা প্লাস প্রজাতি।এই তৃতীয় ঢেউ এর মাঝেই ডেল্টা হানা, মোট আক্রান্তের সংখ্যায় দেশের মধ্যে চার নম্বরে আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। অর্থাৎ বলা যেতে পারে,বঙ্গবাসীর উদ্বেগ বাড়িয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক আরো জানিয়েছে, দেশের যে ৩৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ডেল্টা প্রজাতির স্ট্রেন পাওয়া গিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল পশ্চিমবঙ্গ। গোটা দেশে চতুর্থ স্থানে রয়েছে এ রাজ্য।এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে আমরা নানান প্রশ্নের দৌড়ে যা পেয়েছি তা আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। সচেতন পাঠক আশা করি বিষয়টি উপলব্ধি করে আগামী দিনের জন্য নিজেদের সতর্কতার মধ্যে দিয়ে এই মহামারীর দিনগুলিকে আরো ভালোভাবে প্রতিরোধের রাস্তা দেখাতে সক্ষম হবেন সমাজের বিভিন্ন মানুষকে, চলুন দেখা যাক।

করোনা মহামারী চলাকালীন সংক্রমণের প্রশ্নে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনর্সান’ (ভিওসি) তালিকায় থাকা স্ট্রেনগুলির মধ্যে সর্বাধিক শক্তিশালী ডেল্টা প্রজাতি। দেশে ২৯টি রাজ্য ও ৭টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫টিতেই (রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে) ভিওসি মিলেছে। এবং এর প্রতিটিতেই ডেল্টা হানা দিয়েছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, এই ডেল্টা স্ট্রেনে সংক্রমিতের সংখ্যার নিরিখে দেশের মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যে সব মিলিয়ে ২১ জুন পর্যন্ত ১,৫৫৩টি ভিওসি নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। যার মধ্যে ১,৩৯৭টি হল ডেল্টা স্ট্রেন। যার অর্থ রাজ্যে যে ভিওসিগুলি (অন্যগুলি হল আলফা, বিটা, গামা স্ট্রেন) পাওয়া গিয়েছে, তার মধ্যে ৯০ শতাংশই হল ডেল্টা প্রজাতির। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে আসা মাত্র চার জনের শরীরে ওই নমুনা পাওয়া গিয়েছে। বাকি যে ১,৩৯৪ জনের শরীরে ওই নমুনা মিলেছে, তাঁরা সকলেই রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা। এবিষয়ে স্বাস্থ্যকর্তাদের ব্যাখ্যা, মোট ভিওসি সংক্রমণের ৯০ শতাংশ ডেল্টা প্রজাতি পাওয়ার অর্থ, আরও এক বার স্পষ্ট হল, বাইরে থেকে নয়, পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী জনগোষ্ঠীতে ডেল্টা প্রজাতি ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ এটি যেমন অন্যদের তুলনায় বেশি সংক্রামক, তেমনই এদের হামলায় ফুসফুসের অনেক বেশি ক্ষতি হচ্ছে। পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। যা যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ।

এদিকে,কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ওয়েবসাইট থেকে জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অন্য যে সাতটি রাজ্যে ভিওসি-র ৫০ শতাংশের বেশি ডেল্টা স্ট্রেনের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে, সেগুলি হল, দিল্লি, মহারাষ্ট্র, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, পঞ্জাব, হরিয়ানা ও তেলঙ্গানা। ডেল্টা সংক্রমণে প্রথম স্থানে দিল্লি। এটা যেমন একটা উল্লেখযোগ্য দিক এবং এ বিষয়ে‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল’ (এনসিডিসি)-এর ডিরেক্টর সুজিত সিংহ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘গোটা দেশেই ভিওসি আক্রান্তের সংখ্যা  বাড়ছে। গত মে মাসে যেখানে মোট সংক্রমণের ১০.৩১ শতাংশের নমুনায় ভিওসি পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে জুন মাসে তা বেড়ে হয়েছে ৫১ শতাংশ।’’ জুন মাস পর্যন্ত দেশের ৩৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ১৭৪টি জেলায় ভিওসি-র সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে আলফার ৩,৯৬৯ নমুনা, বিটা, গামা ও ডেল্টার যথাক্রমে ১৪৯, ১ ও ১৬,২৩৮টি নমুনা পাওয়া গিয়েছে।এনসিডিসি-এর ডিরেক্টর সুজিত সিংহ আরওবলেছেন, ‘‘এই ডেল্টা নমুনা পাওয়া রাজ্যগুলিকে তাই আলাদা করে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। যে এলাকাগুলিতে ওই নমুনা পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে ক্লাস্টার বানিয়ে কনটেনমেন্ট জ়োন বানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাড়াতে বলা হয়েছে করোনা পরীক্ষাও।’’এখানেই শেষ নয় অপরদিকে ডেল্টার পরে সারাদেশে ক্রমশ বাড়ছে ডেল্টা প্লাস স্ট্রেনের উপস্থিতিও। এখন পর্যন্ত দেশের ১০টি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ডেল্টা প্লাসের ৪৮টি নমুনা পাওয়া গিয়েছে। ডেল্টা স্ট্রেনে একটি অতিরিক্ত মিউটেশন বা চরিত্র বদলের কারণে সেটি ডেল্টা প্লাসে পরিণত হয়েছে। সংক্রমণের তীব্রতা বৃদ্ধির প্রশ্নে কিংবা করোনা আক্রান্তদের মৃত্যুহার বাড়ার পিছনে ডেল্টা প্লাসের ভূমিকা কতটা, তা গবেষণা করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের  জৈবপ্রযুক্তি সচিব রেণু স্বরূপ।দেশে এখনও পর্যন্ত পরীক্ষার জন্য সংগৃহীত নমুনার মধ্যে কমপক্ষে ২১ হাজার নমুনায় ভিওসি পাওয়া গিয়েছে।

এর মধ্যে আশার কথা হল, করোনাভাইরাসের আলফা, বিটা, গামা, এমনকি ডেল্টা স্ট্রেনের বিরুদ্ধে ভারতীয় প্রতিষেধক কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন কম-বেশি কার্যকর বলে দাবি ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর)-এর ডিরেক্টর বলরাম ভার্গবের। তাঁর দাবি, ভিওসিগুলির বিরুদ্ধে বিদেশি টিকার তুলনায় দেশীয় টিকাগুলি বেশি কার্যকর। ভার্গব বলেন, ‘‘নতুন সন্ধান পাওয়া ডেল্টা প্লাস প্রজাতির উপরে এখন আলাদা করে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন ডেল্টা প্লাসের বিরুদ্ধে কতটা সাফল্য পায় দেখা যাক। ৭-১০ দিনের মধ্যে ওই ফলাফল জানা যাবে।’’তবে  এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য বলার মতো বিষয় হলো ,দেশ জুড়ে ডেল্টা প্লাস প্রজাতির সংক্রমণকে এখনই অতি গুরুত্ব দিতে নারাজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। মন্ত্রকের দাবি, দেশের ১০টি রাজ্য ও ১টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে করোনার এই প্রজাতির সংক্রমণ দেখা দিলেও তা যে ডেল্টা প্রজাতির থেকে বেশি শক্তিশালী, একথা প্রমাণ ছাড়া বলা যাবে না। ডেল্টা প্রজাতিটি সত্যিই ডেল্টার থেকে শক্তিশালী কি না, তা জানতে আরও পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে মন্ত্রকের পদস্থ কর্তারা। আর সেই কারণে ডেল্টা প্লাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করে তা নিয়ে রিপোর্ট হাতে আসার আগে পর্যন্ত মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থাগুলির কর্তারা তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।চলতি সপ্তাহে কয়দিন আগে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর ডিরেক্টর জেনারেল বলরাম ভার্গব জানিয়েছেন, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, গুজরাত, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, ওড়িশা, রাজস্থান এবং কর্নাটকের মতো রাজ্য এবং জম্মুর মতো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে করোনার ডেল্টা প্লাস প্রজাতির সংক্রমণ ছড়িয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ৪৮ জনের দেহে এতে সংক্রমিত হয়েছেন। তবে তা সত্ত্বেও তাঁর মতে, সংক্রমণকে স্থানীয় স্তরেই আটকাতে হবে। তিনি বলেন, “সংক্রমণের ক্লাস্টার পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে তা রুখতে হবে।”ডেল্টা প্লাসের চরিত্র জানতে ওই প্রজাতির জিনোম সিকোয়েন্সিং করছে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (এনসিডিসি)। শুক্রবার তা নিয়ে সবিস্তার তথ্য দিয়েছেন এনসিডিসি-র ডিরেক্টর সুজিতকুমার সিংহ। করোনার ডেল্টা প্রজাতি (যা অনেকের কাছে ভারতীয় প্রজাতি নামে পরিচিত)-র থেকে ডেল্টা প্লাস প্রজাতি শক্তিশালী কি না, তা নিয়ে এখনই কোনও ধারণা তৈরি করা উচিত নয় বলে মনে করছেন তিনি। এ বিষয়ে এনসিডিসি-র ডিরেক্টর সুজিত কুমার সিংহ আরও জানিয়েছেন, “ডেল্টা প্লাস হল করোনার একটি অতিরিক্ত প্রজাতি। এর অর্থ এই নয় যে তা ডেল্টা প্রজাতির থেকে বেশি শক্তিশালী। অন্তত নামের অর্থ তেমন নয়। এ নিয়ে কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি পাওয়া গেলে, আমরা অবশ্যই জানাব।” যদিও ডেল্টা প্লাসের সংক্রমণ কতটা শক্তিশালী তা যে অচিরেই জানা যাবে না, তেমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন সুজিতকুমার। তাঁর কথায়, “যে কোনও প্রজাতির সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক ধারণা গড়ে তুলতে সময় লাগে। জিনোম সিকোয়েন্সিং করতে ১০-১২ দিন প্রয়োজন। তা ছাড়া, করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধিতে কোনও নির্দিষ্ট প্রজাতিই দায়ী কি না, তা দেখার জন্য রাজ্যগুলির থেকে হয়তো ডেল্টা প্লাসের সংক্রমিতদের আরও নমুনা চেয়ে পাঠানো হবে।” প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে যে আমাদের দেশে গত ডিসেম্বরে ডেল্টা প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। তার পর থেকে চলতি মাসে তার সংক্রমণ ছড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি-সহ দেশের ৩৫টি রাজ্যের ১৭৪টি জেলায়। এনসিডিসি-র মতে ডেল্টার থেকেও করোনার আলফা প্রজাতি বেশি শক্তিশালী।কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান থেকে জানা যাচ্ছে যে,ইতিমধ্যেই ভারতের তিন রাজ্যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে ওই নতুন রূপ। মূল করোনাভাইরাসের থেকে চরিত্র বদল করা ডেল্টা প্লাস প্রজাতি সংক্রমণের নিরিখে প্রবল শক্তিশালী। বিশেষজ্ঞদের একাংশের আশঙ্কা, এক বার ওই নতুন রূপ ছড়াতে শুরু করলে তাকে নিয়ন্ত্রণ করা কার্যত দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে। যদিও এই উদ্বেগকে আপাতত দূরে সরিয়ে রাখতে বললেন ভারতের শীর্ষস্থানীয় এক চিকিৎসক এবং জিনোম সিকোয়েন্সার। জিনোমিক্স অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ বায়োলজি ইনস্টিটিউট (আইজিআইবি)-এর ডিরেক্টর অনুরাগ অগ্রবাল যদিও দ্বিতীয় ঢেউয়ে কোভিড বিধিনিষেধে ঢিলেমির বিষয়ে সতর্ক করে বলেছেন, ‘‘এই ডেল্টা প্লাসের সঙ্গে সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউয়ের যোগ আছে, এই মুহূর্তে এমন কোনও প্রমাণ নেই। আমার প্রতিষ্ঠান জুন মাসে মহারাষ্ট্র থেকে সাড়ে তিন হাজারের বেশি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করেছি। এছাড়াও এপ্রিল ও মে মাসের নমুনাও রয়েছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে এগুলো (ডেল্টা প্লাস) সেখানে খুব বেশি। তবে এগুলি সব মিলিয়ে এক শতাংশেরও কম।’’ অগ্রবালের আরও দাবি, ‘‘ডেল্টা প্লাস যে জায়গাগুলেতে বেশি সংক্রমণ ছড়িয়েছে, দেখতে গেল সেটা খুব বেশি নয়। পরিস্থিতি স্থিতিশীল বলেই মনে হচ্ছে।’’এ বিষয়ে আরো জানা গিয়েছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীন ভারতে ইতিমধ্যেই ৪০ জনের বেশি ডেল্টা প্লাস প্রজাতিতে আক্রান্ত হয়েছেন। মহারাষ্ট্র, কেরল ও মধ্যপ্রদেশকে সতর্ক করে দিয়েছে কেন্দ্র। চিকিৎসক অগ্রবাল অবশ্য স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘‘যে কোনও ডেল্টা রূপ নিয়েই উদ্বেগ স্বাভাবিক।

\তবে তৃতীয় ঢেউয়ের চিন্তাভাবনার আগে আমাদের দ্বিতীয় ঢেউ শেষ না হওয়ার বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। ডেল্টা প্লাসের কারণে তৃতীয় ঢেউ আসবে, এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার জন্য আমি এখনই কোনও কারণ দেখতে পাচ্ছি না। এর পক্ষে কোনও প্রমাণও নেই।’’করোনাভাইরাসের নতুন ডেল্টা প্লাস প্রজাতি নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করছে। ওই প্রজাতির করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ৪০টি ঘটনা ইতিমধ্যে সামনে এসেছে ভারতে। করোনার এই প্রজাতি নিয়ে মঙ্গলবারই মহারাষ্ট্র, কেরল এবং মধ্যপ্রদেশকে সতর্ক করেছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।এ বিষয়ে আরো জানা গিয়েছে,করোনা ভাইরাসের ডেল্টা প্রজাতি বা ভারতে প্রথম সন্ধান পাওয়া বি.১.৬১৭.২ প্রজাতির পরিবর্তিত রূপ করোনার ডেল্টা প্লাস প্রজাতি। ভারতে এই প্রজাতিতে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা এখনও বেশ কম। কিন্তু দেশের বিভিন্ন রাজ্যে লকডাউন উঠছে, তাই নতুন প্রজাতি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও বাড়ছে।করোনা মহামারীর বাড়বাড়ন্তের ফলে যেটুকু জানা গিয়েছে তাহলে এরকম,এখনও অবধি মহারাষ্ট্রে ২১ জন করোনার ডেল্টা প্লাস প্রজাতিতে আক্রান্ত হয়েছেন। মধ্যপ্রদেশে ৬ জন, তামিলনাড়ুতে এবং কেরলে ৩ জন করে আক্রান্ত হয়েছেন এই প্রজাতিতে। কর্নাটকে কয়েক জনের মধ্যে থাবা বসিয়েছে এই প্রজাতি। অন্ধ্রপ্রদেশ, পঞ্জাব এবং জম্মুতে এক জনের শরীরে ডেল্টা প্লাসের উপস্থিতি দেখা গিয়েছে।এ বিষয়ে করা গাইডলাইন মেনে সব রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশে ।প্রসঙ্গত, নতুন ডেল্টা প্লাস প্রজাতির ব্যাপারে এখন খুব বিস্তারিত জানতে পারেননি গবেষকরা। ভারত ছাড়াও আমেরিকা, ব্রিটেন, পর্তুগাল, সুইৎজারল্যান্ড, জাপান, পোল্যান্ড, রাশিয়া এবং চিনে করোনাভাইরাসের এই প্রজাতির সন্ধান এখনও অবধি মিলেছে বলে জানা গিয়েছে।আগামীতে করোনাভাইরাস এর তৃতীয় ঢেউ আশঙ্কার কথা বলা হলেও বেশকিছু মহল থেকে এ বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশ করে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন অংশে এই মহামারী প্রতিরোধে জনসাধারণের মধ্যে সতর্কতা প্রসারের সুফল পাওয়া যাবে এবং তা  মেনে চলা হলে আসন্ন তৃতীয় ঢেউ আটকে দেওয়া অসম্ভব নয় বলে মনে করছেন অনেকেই। কারণ ভারতবর্ষের মতো বিশাল জনবহুল দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পরিকাঠামো আশানুরূপ না হওয়ায় একমাত্র জনসাধারণের প্রত্যক্ষ সাবধানতা পারে এরমোকাবিলা করতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.