GeneralNewsPoliticsSambad MatamatWorld

‘দেশকে ভালবাসুন’

শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক।।

আপনি যত ভাল গাড়ী চালান না কেন, তবু আপনি এক্সিডেন্টের কবলে পড়তে পারেন। এ দৃষ্টান্তটি এখন বাংলাদেশে নির্বাচনের জন্যে প্রযোজ্য। সরকার চাইলেও যে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে তা বলা যায় না। সকল পক্ষ এটি চাইতে হবে? একইভাবে নির্বাচন কমিশন চাইলেও ভোট অবাধ ও সুষ্ঠূ হবে এমন থিওরী সত্য নয়, কারণ প্রার্থীদের মধ্যে ইতিমধ্যে ‘বিনা-ভোটে’ জয়ের একটি প্রবণতা গড়ে উঠেছে। সম্ভবত: একারণে বিএনপি শেখ হাসিনা’র অধীনে নির্বাচন যেতে চায়না, অন্যদিকে আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বেই নির্বাচন করতে আগ্রহী। 

এ মুহূর্তে এটি মূল সমস্যা। রাজনীতিকরা কি পারবেন এ সমস্যার সমাধান দিতে? মনে হয়না, তাহলে বিদেশিরা মাঠে থাকবেন বৈকি!  সঙ্গত কারণে সরকার এখন বিদেশীদের পছন্দ করছেন না, বিএনপি পছন্দ করছেন। ২০০৮-এ ঠিক উল্টোটা ছিলো। তাহলে দোষটা কি বিদেশীদের না আমাদের? দেশের প্রতিটি রাজনীতিকের স্বীকার করা উচিত যে, তাঁরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কখনই আন্তরিক ছিলেন না, সবাই ক্ষমতার ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্থের’ কথা ভেবেছেন? ক্ষমতায় গেলে সবাই ভুলে যান, ‘আমি তো ভাই ঘরের মালিক নই’! 

আজকে দেশে যে সমস্যা এজন্যে পুরোপুরি রাজনীতিকরা দায়ী। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দায়ী। গণআন্দোলনে এরশাদের পতনের পর জাতি বড় দুই দলের কাছে আশা করেছিলো যে, আর যেন কেউ অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসতে না পারে? দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়, মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে। ২০২৩-এ দাঁড়িয়ে বলা যায়, এর কোনটাই হয়নি? নূর হোসেন বুকে পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লিখে পুলিশের গুলিতে প্রাণ দেয়াটা বৃথাই গেছে। আমরা মুখে বলি, নেতার চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়, কাজ করি ঠিক উল্টো। 

নির্বাচন ঘনাচ্ছে, জটিলতা বাড়ছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে এবার দেশপ্রেমের পরীক্ষা দিতে হবে? কারণ দেশের চাইতেও ক্ষমতার প্রেম তাঁদের বেশি। প্রয়াতঃ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছিলেন, ‘বাঘে ধরলে ছাড়ে, শেখ হাসিনা ধরলে ছাড়েনা’। আমেরিকা কিন্তু একবার ধরলে সহজে ছাড়েনা। ভারত-চীন-রাশিয়া যতই পাশে থাকুক, আমেরিকা ‘অর্থনৈতিক অবরোধ’ দিলে অবস্থা বেসামাল হয়ে যাবে। আমেরিকা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বলছি না যে, আমেরিকা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেবে, পরিস্থিতি যাতে সেদিকে না গড়ায় সেটি খেয়াল রাখতে হবে। তাই বলছিলাম, ‘দেশকে ভালবাসুন’। ভারত আমেরিকাকে জানিয়েছে, শেখ হাসিনার সরকার দুর্বল হয়ে পড়লে ভূরাজনৈতিক দিক থেকে তা ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র কারো পক্ষেই সুখকর হবে না। ভারত ও আমেরিকা প্রকাশ্যে শেখ হাসিনার পক্ষে-বিপক্ষে, কিন্তু বাংলাদেশের জন্যে ভারত আমেরিকার সাথে সম্পর্ক নষ্ট করবে ততটা আশা করা বোধহয় ঠিক নয়। সেপ্টেম্বরে বিষয়টি খোলসা হবে? সমস্যা হচ্ছে, আমেরিকা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠূ নির্বাচন চায়, ভারত তো বলতে পারবে না যে, তাঁরা সুষ্ঠূ নির্বাচন চায়না? প্রক্রিয়া নিয়ে হয়তো আলোচনা হতে পারে, কিন্তু সুষ্ঠূ নির্বাচন নিয়ে তো কারো আপত্তি থাকার কারণ নেই ? Pic courtesy: East Asia Forum

Leave a Reply

Your email address will not be published.