GeneralIndiaNewsPoliticsSambad Matamat

অসুস্থ অধ্যাপক সাইবাবাকে জেলেই পচিয়ে মারতে “মোদী ভক্ত” বিচারপতি ঠিকই যুক্তিই সাজিয়েছেন! মানুষের মস্তিষ্কই সব থেকে সাংঘাতিক জিনিস। বিশেষ করে মাওবাদীদের..

— প্রসূন আচার্য

বিগত ৮ বছর ধরে মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগে জেলে থাকা ৯০% শারীরিক প্রতিবন্ধী, হুইল চেয়ার নির্ভর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জি এন সাইবাবার মুক্তি নাকচ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট !

শুক্রবার মুম্বই হাইকোর্ট তাঁকে এবং তাঁর সঙ্গে আরও কয়েক জনের বিরুদ্ধে ( তারমধ্যে JNU এর এক ছাত্র আছেন ) মহারাষ্ট্র সরকারের আনা মিথ্যে UAPA মামলা খারিজ করে দেয়। একই সঙ্গে তাঁদের মুক্তির নির্দেশ দেয়।

কিন্তু মহারাষ্ট্রের বিজেপি – শিন্দে সরকার রাত না পোয়াতেই এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যায়। শনিবার ছুটির দিন বন্ধ থাকা সুপ্রিম কোর্ট খুলে বিচারসভা বসে। এবং দুই বিচারপতি এম আর শাহ এবং বেলা এম ত্রিবেদী তাঁদের মুক্তি খারিজ করে দিয়ে পুনরায় জেলে বন্দী রাখার নির্দেশ দেন।

জি এন সাইবাবা প্রচণ্ড অসুস্থ। তাঁর গলা ক্রমেই বুকের হাড়ের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছেন। তাঁর হাঁটার শক্তি নেই। কথাও বলতে পারছেন না। তাঁর ভাল চিকিৎসা প্রয়োজন। জেলে যা আদৌ হচ্ছে না। কিন্তু বিজেপি সরকার চায়, এই ধরনের মানুষরা জেলেই পচে মরুক। তারা যাতে কোনও মতই খোলা আকাশের স্বাদ না পায়। শনিবার ছুটির দিন বিশেষ বেঞ্চের দুই বিচারপতি ঠিক সেই মতই রায় দিয়েছেন।

ঝাড়খণ্ডের পাদ্রী শিক্ষাব্রতী স্টান স্বামীর ক্ষেত্রে যা হয়েছিল, সাইবাবার ক্ষেত্রেও যেন সেটাই হয় চাইছে ফ্যাসিস্ট বিজেপি সরকার। রোগে ভুগে জেলেই মরে যাক। দেখা যাচ্ছে, একই মতের সঙ্গী দেশের বিচার ব্যবস্থার একাংশ।

রায় দিতে গিয়ে দেখি বিচারপতি শাহ মন্তব্য করে বলেছেন, “…মানুষের মস্তিষ্ক হচ্ছে সব থেকে সাংঘাতিক জিনিস। সন্ত্রাসবাদী এবং মাওবাদীদের পক্ষে মস্তিষ্কই সব!” তাঁর কথায় পরিষ্কার, বিচারব্যবস্থার একাংশ পুরো পক্ষপাত দুষ্ট। চোখে কোনও কালো কাপড় বাঁধা নেই।

এই দেশে কি আদৌ গণতন্ত্র আছে ?

ঠিক কী হয়েছে, বিচারপতি শাহ কী বলেছেন, NDTV পোর্টাল থেকে সেই খবর হুবহু তুলে দিলাম।

M R Shah and Bela M Trivedi, which sat on a non-working day to hear the matter, also rejected GN Saibaba’s request ….

Later, denying the request for house arrest, the bench said that the academic has been convicted for serious offence. “We are not referring to this case but in general. The brain is the most dangerous thing. For terrorists or Maoists, the brain is everything,” Justice Shah said. ( NDTV)

অধ্যাপক জে এন সাইবাবাকে তাঁর মৃত্যু শয্যায় থাকা মার সঙ্গে দেখা করা তো দূর, ভিডিও কনফারেন্সে পর্যন্ত কথা বলতে দেওয়া হয়নি। তাঁর মা মারা যান। অসুস্থ কন্যার জন্য তিনি বাড়িতে গৃহ বন্দী থাকার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সরকার তরফে সলিসিটর তুষার মেহেতা এই আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, “এই গৃহবন্দী থাকার আবেদন করা আর্বান নকশালদের একটা নতুন ছক।”

কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রীতিমত সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছে ” আর্বান নকশাল” কী তারা জানে না। এই দুই শব্দের কোনও অর্থই নেই তাদের অভিধানে। কিন্তু তা সত্বেও প্রধানমন্ত্রী মোদী আর্বান নকশালদের কথা বলে যাচ্ছেন বিভিন্ন সভায়। সম্প্রতি গুজরাটে ভোটের প্রচারেও বলেছেন। এমনকি সলিসিটর তুষার মেহেতা অব্দি বলছেন ! গোটা দেশটাই কি অশিক্ষিত নির্ভর হয়ে গেল? কথাটা প্রথম ব্যবহার করেছিল প্রচণ্ড বাম বিরোধী এবং বিজেপি ঘনিষ্ঠ চিত্র পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী তাঁর এক সিনেমায়। যার কোনও ভিত্তি নেই।

ফ্যাসিস্ট শাসনের এটাই লক্ষণ। একটা বানানো মিথ্যে কথাই বার বার বলে সত্যি প্রমাণের চেষ্টা করা হয়। আজ ভারতেও তাই হচ্ছে। C@ Prasun Acharya ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published.